উনারা ২৯ বছর দেশের জন্য কী করেছেন: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী


মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলক হক বলেছেন, ব্ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনা মিলে দেশ শাসন করেছেন মাত্র ২১ বছর। আর বাকিরা ২৯ বছর শাসন করেছেন। আপনারা দেখেন, আমরা কী করেছি, আর উনারা ২৯ বছর দেশের জন্য কী করেছেন। এই হিসাব করলেই বোঝা যাবে দেশ প্রতিষ্ঠিত হোক এটা তারা চান নাই।
বুধবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবন মিলনায়তনে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) কার্যালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালীন বিরোধী দলে থেকে শেখ হাসিনা বলেছিলেন কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন আমরা যদি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হই, তাহলে বিশ্ব থেকে রিলিফ ও সহযোগিতা পাব না।
তিনি বলেন, পাকিস্তান একটা ব্যর্থ দেশ, তারা চায় বাংলাদেশকেও ব্যর্থ দেশ হিসেবে পরিণত করার জন্য। যে আমেরিকা এক সময় বাংলাদেশকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ বলেছিল, সেই দেশের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাই কেনিয়া গিয়ে বলেছেন, তোমরা শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করো, বাংলাদেশকে রোল মডেল মানো।
‘বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশকে ২৬ বার সম্মাননা দিয়েছেন। কিন্তু অন্য যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা কিছুই আনতে পারে নাই। বরং তার চারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।’
মোজাম্মেলক হক আরও বলেন, আমরা তো রাজনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রে পাকিস্তান আমলেও স্বাধীন ছিলাম। কিন্তু আমরা এখন চাই অর্থনৈতিক মুক্তি। আমরা অনেক কিছুতেই এগিয়ে গেছি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি। কারণ ২৯ বছর দেশটাকে অন্যেরা খেয়েছে।
‘পাকিস্তান আমল ২৩ বছর ছিল। আবার স্বাধীনতার পর তাদের দোসররাও ২৯ বছর খেয়েছে। সেই জায়গা থেকে চাইলেই মুক্তি পাওয়া বা এই শেকড় উপড়ে না ফেলা সহজ নয়।’
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, বাঙালির মুক্তির জন্য ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জনগণের মুক্তির আন্দোলন শুরু করেছিলেন। অনেকেই বলেন, বঙ্গবন্ধু তো চাইলেই ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারতেন। কিন্তু ওই সময়ে যদি তিনি ঘোষণা দিতেন, তাহলে বিশ্ব বলতো, এটা বিচ্ছিন্নতাবাদ আন্দোলন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি দেখলেন বিশ্ব জনমত আমাদের পক্ষে কিনা। যখন আমাদের পক্ষে আসলো তখনই আমরা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়লাম। তখন বিশ্ব আমাদের পক্ষে ছিল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন বিশ্ব নেতা।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বিদেশে গিয়ে বাংলায় বক্তৃতা করলেন। তিনি জাতিসংঘে গিয়ে বলেননি আমাকে ভিক্ষা দেন। তিনি বিশ্ব নেতাদের সামনে মাথা উঁচু করে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আপনারা অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে মানুষের পেছনে ব্যয় করেন। বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত। শাসক ও শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, করোনা মহামারির কারণে আমাদের একটা পরিকল্পনা ছিল। বিশ্বর কাছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে তুলে ধরার। কিন্তু তা পারা যায়নি। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন দেশের মানুষের মুক্তি। আমিরা যেন তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি এই হোক শপথ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সিএজি মাসুদ আহমেদ, সিজিএ নুরুল ইসলাম, ডিসিএজি (সিনিয়র) মো. মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত সচিব দেওয়ান সাইদুল হাসান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অর্থ নিয়ন্ত্রক (প্রতিরক্ষা ক্রয়) ডা. তানজিনা ইসলামসহ অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিভাগেরর অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
