
‘দৈনিক বাংলা খবর প্রতিদিন’এ নিউজ প্রকাশের পর ভেঙে ফেলা হলো অবৈধ স্থাপনা!



‘দৈনিক বাংলা খবর প্রতিদিন’এ সরজমিনে অনুসন্ধান করে নিউজ প্রকাশের পর সরকারি রাস্তার উপর অবৈধভাবে সামাজিক সংগঠনের স্থাপনা আজ ভেঙে ফেলা হয়েছে।
‘মাতৃ-ছায়া প্রতিবন্ধী সমাজ কল্যান সংস্থা’ একটি সামাজিক সংগঠন। রাজধানীর মিরপুর ১২, ধ-ব্লক, আধুনিক হাসপাতাল (পুরাতন) সংলগ্ন একটি রাস্তার পাশে সংগঠনটির অফিস রয়েছে। তারা ২০০৭ সালে কাজ শুরু করে এবং ২০১৫ সালে নিবন্ধিত হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ইং তারিখে সংবাদ প্রকাশের দিন পর্যন্ত তারা কোন সরকারি মহলে সামাজিক সংগঠনের অফিস বা স্থাপনার জন্য কোন আবেদন করেনি। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ শহীদুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি নাজমা বেগম। সম্পর্কে তারা স্বামী-স্ত্রী। তারা কারো অনুমতি না নিয়েই সরকারি রাস্তার উপর একটি স্থাপনা দাঁড় করায়। এ বিষয়ে সর্বপ্রথম ‘বিডিনিউজ ৯৯৯ ডটকম’ এবং ‘দৈনিক বাংলা খবর প্রতিদিন’ অনুসন্ধান করে রিপোর্ট করে।
তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, আমরা এটি প্রতিবন্ধীদের স্কুল হিসেবে ব্যবহার করবো। অথচ স্থাপনাটি কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দাঁড় করানো হয়।
যে ভবনটির পাশে কথিত প্রতিবন্ধী স্কুল করা হয়, সেই ভবনটির মালিক একজন অসুস্থ্য বৃদ্ধা মহিলা। বাড়িতে তিনি বেশিরভাগ সময় একাই থাকতেন। নাজমা বেগমের ভাষ্যমতে স্থাপনাটি প্রতিবন্ধী স্কুল হলেও সেখানে কোন প্রতিবন্ধীদের পাঠদান কারো চোখে পড়েনি। তাছাড়া রাতে সেখানে বিভিন্ন নেশাখোর নেশা করতো এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতো। বৃদ্ধা মহিলার বাসার জানালায় ইট ছুড়ে মারতো।
এছাড়াও নাজমা বেগম ও তার স্বামী শহীদুল ইসলামের নামে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়ার পর বিডিনিউজ ৯৯৯ সরেজমিনে অনুসন্ধানে নামে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন যায়গা থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয় জানতে পারা যায়।
অনেকে অভিযোগ করেন, নাজমা বেগম তার পছন্দমতো গুটিকয়েক লোককে কিছু অনুদান দিলেও বাকিটা নিজেরা আত্মসাৎ করে। এছাড়া তাদের বার্ষিক আয়-ব্যয়েরও তেমন হিসাব দিতে পারেন না তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে তখন বলেন, “নাজমা বেগম বিভিন্ন যায়গা থেকে বিভিন্ন নেতার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্নভাবে আয় করে। যেখানে অফিস নেয় এবং কোনকিছু ভাড়া নেয়, তারা ছলেবলে কৌশলে সেটা নিজের নামে করে নেয়। নানান কৌশলে স্ট্যাম্প ও চেক নিয়ে লোকজনকে হয়রানি করে। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস করেনা। কারণ সে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ কাউকেই মামলা দিতে বাকি রাখে না। তাই আমরা কেউ এগুলো ভয়ে বলতে পারিনা।”
উপরোক্ত অভিযোগগুলো সহ সার্বিক বিষয় সরজমিনে অনুসন্ধান করে সর্বপ্রথম ‘বিডিনিউজ ৯৯৯ ডটকম’ ২০২৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর জাতীয় পত্রিকা “দৈনিক বাংলা খবর প্রতিদিন” একটি সংবাদ প্রকাশ করে। এর ২ মাস পর “মোহনা টেলিভিশন” ও মে মাসে একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রচার করে। সেখানেও নাজমা বেগম ও তার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নানান অনিয়ম বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
অবশেষে আজ ১৪ই মে ২০২৩, রোজ রবিবার দুপুরে নাজমা বেগম নিজেই কিছু লোক দিয়ে তার কথিত প্রতিবন্ধী স্কুলের ভবনটি ভেঙে ফেলে। সে সময় স্থানীয় জনগণ উপস্থিত ছিলেন। এবিষয়ে নাজমা বেগমের কাছে জানার জন্য একাধিকবার তাকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
